বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম দেখে নিন

আসসালামু আলাইকুম। শিশু জন্মের পর সব মা বাবার ই ১ম ও প্রধান লক্ষ থাকে কিভাবে বাচ্চাকে সুস্থ রাখা যায়। তা সত্ত্বেও ছোট বাচ্চার দেহে প্রতিরক্ষা আয়োজন তুলনামূলক দূর্বল হওয়ায় অল্প ঠান্ডা বা উত্তাপ পরিবেশে বাচ্চাদের সর্দি কাশি লেগে যায়। বিশেষ করে সিজন বদলানোর কারনে কাশি বা সর্দি আরো অধিক হয়। আজকে আমরা চেষ্টা করবো বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম নিয়ে আপনাদের একটা সুন্দর প্ল্যান দিতে।

বাচ্চাদের কাশির সিরাপ বলতে আমরা শুধু দোকানের সিরাপ বুঝাচ্ছি না। বরং কামরায় তৈরি করা নানারকম ধরনের সিরাপকে বুঝাচ্ছি। ছোট বাচ্চাদের জন্য দোকানের সিরাপ অনেক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ট্রাই করবেন শুরুতেই বাজারের না খাওয়ানোর। এর চেয়ে যদি ঘরোয়াভাবে চিকিতসা করা যায় তাহলে ছোট্ট শিশু আরো অধিক সুস্থ থাকবে। এজন্য আমাদের আজকের আলোচনার হেতু টার্গেট থাকবে বাচ্চাদের কাশির সিরাপ কিভাবে ঘরে বানাবেন এবং বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম নিয়ে। প্রার্থনা করছি আজকের আলোচনা আপনার উপকারে আসবে। চলুন আরম্ভ করি।

বাচ্চাদের সর্দি কাশি কেন হয়

বাচ্চাদের কাশির সিরাপ নিয়ে আমরা নিশ্চয়ই আলোচনা করবো কিন্তু তার প্রথমে আমাদের জানা কর্তব্য বাচ্চাদের সর্দি কাশি কেন হয়। কারন আপনি যদি জানেন সমস্যার নিমিত্ত কারন কি তাহলে রোগ হওয়ার পূর্বেই আপনি আয়োজন নিতে পারবেন। বাচ্চাদের বেশ কয়েকটি কারনে সর্দি কাশি হতে পারে পাদদেশে আমরা কিছু উল্লেখযোগ্য কারন ও এর থেকে বাচা =র উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।

সিজন পরিবর্তন – বেশিরভাগ ছোট বাচ্চাদের সর্দি কাশি বা ঠান্ডা লাগার হেতু কারন হলো সিজন পরিবর্তন। সিজন বদলানোর টাইম আবহাওয়ার সাথে বড়দের মত বাচ্চারা ফাস্ট এডজাস্ট করতে পারে না ফলে দিনশেষে সর্দি কাশির মত প্রবলেম গুলো দেখা দেয়। এই প্রবলেম হতে বাচতে অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে তার সাথে আবহাওয়া অনুসারে বাচ্চার নিতে হবে। বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

জীবানুর কারনে – অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চাদের সর্দি কাশি হয়ে থাকে বিভিন্ন ক্ষতিকর ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়ার কারনে। বাচ্চার থাকার বাড়ি ক্লিয়ার না হলে, বাচ্চার জামা কাপড় পরিষ্কারভাবে ক্লিয়ার না করলে এমন প্রবলেম হতে পারে। এছাড়াও ছোট বাচ্চা যে রুমে থাকবে তা দিনের একটা টাইম জানালা খুলে রাখার ট্রাই করবে যেনো রুম স্যাতশ্যাতে হয়ে না যায়। হেতু কথা হচ্ছে বাচ্চাকে পরিষ্কার রাখতে হবে।

ফ্যানের বায়ু সরাসরি অন্তরে লাগা – আমরা অনেক টাইম বাচ্চার উষ্ণতা লাগে বলে টেবিল ভক্ত ক্রয় করে বাচ্চার দিকে মুখ করে দিয়ে রাখি। কিন্তু অনেক টাইম সরাসরি বুকে বায়ু লাগার কারনে বাচ্চার মারাত্মক শুকনা কাশি হতে পারে। একারণে শীর্ষ গতিতে ভক্ত চালানো, সরাসরি হৃদয়ে পাখার বাতাস না দেয়া। এইসব স্মৃতি করবেন। এছাড়াও আপনার বাসায় যদি এসি থাকে তাহলে ট্রাই করবেন লম্বা টাইম ধরে পুরো এসি ব্যবহার না করে কতিপয় টাইম পর পর দরজা জানালা খুলে বাচ্চাকে একটু নরমাল পরিবেশে রাখতে হবে।

মায়ের ঠান্ড লাগলে – ছোট বাচ্চাদের বিশেষ করে ৮ মাসের কম বাচ্চাদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অনেক টাই অবলম্বন করে মায়ের শরীরের উপর। অর্থাৎ মা যদি সুস্থ থাকে তাহলে শিশু ও সুস্থ থাকবে আর মা যদি অসুস্থ হয় তাহলে খুব সম্ভাবনা আছে। বুকের দুধ খাওয়ানো অবস্থায় মা হিসেবে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে কারন আপনার ঠান্ডা, সর্দি কাশি লাগলে বাচ্চার ও লাগার সম্ভাবনা প্রচুর বেশি।

গোসল করানোর টাইম সাবধান – ছোট বাচ্চাকে সরাসরি ঠান্ডা পানিতে গোসল করানো সমীচীন নয়। পানি হালকা অবস্থায় স্নান করালে ছোট্ট শিশু সুস্থ থাকবে। আর বেশি সময় ধরে স্নান করাবেন না এতে করে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঘড়োয়া ঔষধের নাম

যদিও আজকে আমাদের নিমিত্ত আলোচনা বাচ্চাদের কাশির সিরাপ নিয়ে তবে আমরা বাজারের সিরাপের চেয়ে কামরায় বানানো নানারকম ধরনের সিরাপের দিকে অধিক নজর দিবো। কারন বাচ্চাদের শুরুতেই বাজারের সিরাপ খাওয়ালে পরবর্তীতে বিভিন্ন রকম জটিলতা সৃষ্টি থেকে পারে। তাই প্রথমে আমরা বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঘরোয়া টোটকা কতিপয় চিকিতসা প্রক্রিয়ায় নিয়ে আলোচনা করবো।

মধু – মধু এইরকম এক জিনিস যা ১০০০ এর বহু রোগের উপকার করে। কিন্তু প্রাচীনকাল হতে মধু সর্দি কাশির জন্য প্রচুর প্রয়োগ হয়ে আসছে। বাচ্চার বয়স যদি ১.৫ সালের কম হয় তাহলে মধু খাওয়ানো যাবে না।কারন ১.৫ বছরের কম বাচ্চাকে মধু খাওয়ালে বটুলিজমের শিকার হতে পারে যা বাচ্চার জন্য বিপসজ্জনক আকৃতি ধারন করতে পারে। কিন্তু বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মধু ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি জিনিস খেয়াল রাখার জন্য হবে। উদাহরণসরূপ – মধু ক্রয়ের সময় স্মরণ রাখার জন্য হবে যেনো আসল মধু হয়।

আদা – আদার রস কাশির জন্য খুবই কার্যকর। তবে বাচ্চার বয়স ৬ মাসের কম হলে আদার রস খাওয়ানো যাবে না। কেবল মাত্র দিনে যদি কয়েকবার করে আদার রস খাওয়াতে পারেন তাহলে দুই দিনের মধ্যেই শুষ্ক কাশি অনেক ভালো হয়ে যাবে প্রার্থনা করি। আদার রসে যেসকল উপকরণ বিদ্যমান তা শুকনো কাশির বিপক্ষে খুবই কার্যকর। বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

আদা ও মধুর সিরাপ – ২ টেবিল চামচ মধু ও এক টেবিল চামচ আদার রসের সাথে অল্প জল মিশিয়ে সিরাপ বানাতে পারেন। এই সিরাপে একই সাথে মধু বিদ্যমান এবং আদার রস আছে যা বাচ্চার জন্য খুবই কার্যকরি। সর্দি বা শুকনো কাশির জন্য খুবই কার্যকর। এছাড়াও বাচ্চার বুকে যদি কফ জমে থাকে তাহলেও এই সিরাপটি খাওয়াতে পারেন। প্রার্থনা করছি খুব অনেক ভালো ফল ফল পাবেন। কিন্তু ১ সালের কম বাচ্চাকে এই সিরাপ না খাওয়ানোর পরামর্শ থাকলো।

মধু ও লেবুর রসের সিরাপ – ২ টেবিল চামচ মধুর সাথে ২ টেবিল চামচ দেশী লেবুর রস মিশিয়ে নিন। অতঃপর পরিষ্কার একটি কাচের বোতলে তা সংরক্ষন করুন। কয়েকটি টাইম পর পর বাচ্চাকে ঈষৎ ঈষৎ করে পান করান। আশা করছি অত্যন্ত দ্রুত ই সর্দি ও কাশি সুন্দর হয়ে যাবে।

দুধ ও মধুর সিরাপ – ১ কাপ উত্তাপ দুধে ২ চামচ নিখুঁত মধু মিশান। অতঃপর বাচ্চার বয়স অনুসারে যতটুকু পসিবল পান করান। শুধুমাত্র উত্তাপ দুধ ই শুকনো কাশির জন্য অনেক ভালো কাজ করে আর সঙ্গে মধু মিশালে কার্যকারিতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। তবে বাচ্চাকে খাওয়ার সময় রাখতে হবে দুধ যেনো অবশ্যই পাতলা গরম হয়। ঠান্ডা দুধ পান করালে কাশির জন্য তেমন কোন কাজে আসবে না।

আদা রশুনের মিশ্রন – একটি ক্লিয়ার পাত্রে অল্প জল ও মধু মিশিয়ে সেখানে পরিমান মত আদা ও রশুন কুচি করে ৩/৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর রসুন ও আদা তুলে নিয়ে বাচ্চাকে জল পান করান। রসুন বরাবর ই জ্বর সর্দি কাশি সহ পর্যাপ্ত রোগের জন্য ভীষণ ভালো কাজ করে। একারণে প্রার্থনা করছি এই সিরাপ টি খাওয়ালে বাচ্চা প্রচুর দ্রুত ই সুস্থ হয়ে উঠবে এবং কাশি ভালো হয়ে যাবে।

উপরে আমরা যেসব গৃহসম্বন্ধীয় সিরাপের নাম বলেছি তা শুধুমাত্র ১ বছরের বেশি বয়সের বাচ্চাদের জন্য। বাচ্চার বয়স ১ বর্ষের কম হলে মধু, আদা, রসুনের মত জিনিস দয়া করে খাওয়াবেন না। সেক্ষেত্রে সরাসরি ভাবে ডাক্তারের নিকট নিয়ে যাবেন তার সাথে ডাক্তার দেখে রোগের প্রতিকারক দিবেন। বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

বাচ্চার গলায় কফ জমে গেলে কি করবেন

সাধারনত ছোট বাচ্চাদের শুকনা কাশি চালু হলে চমৎকার চিকিতসা না পেলে দুই তিন দিন পর বাচ্চার গলার কফ জমে যায়। এরূপ অবস্থায় আপনাকে ফাস্ট নিকটস্থ শিশু রোগ বিশেষজ্ঞের নিকট যেতে হবে। চিকিৎসক শিশুর পরিস্থিতি দেখে ও কফের সংখ্যা দেখে রোগের প্রতিকারক দিবেন। কিন্তু ঔষধের পাশাপাশি আপনি পাতলা দুধ ও মধুর সিরাপ খাওয়াতে পারেন। কিন্তু বাচ্চার বয়স যদি ১ সালের কম হয় তাহলে আমাদের সাজেশন থাকবে গৃহসম্বন্ধীয় চিকিতসা না করে সরাসরি ডাক্তারের নিকট নিয়ে যাওয়া ই আপনার জন্য সবচেয়ে চমৎকার হবে।

কফ-কাশিতে আক্রান্ত শিশুকে খাওয়ানো ও নিদ্রা পাড়ানোর প্রথমে পাতলা উত্তাপ জলে পাতলা ও পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে তা শলাকার মতো করে নাক পরিষ্কার করে দিলে বাচ্চা নিশ্বাস নিতে সুবিধা হবে।
শিশুর কাশি লাঘবের জন্য বাজারের সিরাপের চেয়ে অধিক নিরাপদ মধু, তুলসী পাতার রস বা লেবু মেশানো পুষ্প উত্তাপ সিরাপ।

৬ মাসের বাচ্চার কাশি হলে করনীয় কি

উপরে আমরা যেসব ঔষধের কথা বলেছি তা একমাত্র ১ বছরের অধিক বয়সের বাচ্চাদের জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ বাচ্চার বয়স যদি ১ সালের কম হয় সেক্ষেত্রে উপরে কোন সিরাপ খাওয়ানো নির্ভুল হবে না। অধিকাংশই প্রশ্ন করার জন্য পারেন তাহলে ৬ মাসের বাচ্চার কাশি হলে করনীয় কি। উত্তর হচ্ছে মায়ের বুকের দুধ। শিশু যতদিন মায়ের বুকের দুধ পাচ্ছে ততদিন এটাই তার জন্য সবচেয়ে বিশাল ঔষধ। ছোট্ট শিশু অসুস্থ হলে খায়াল রাখবেন কোনভাবেই যেনো বুখের দুধের ঘাটতি না হয়। কারন মায়ের বুকের দুধে বাচ্চার জন্য প্রয়োজনীর সব এন্টিবডি আছে। সুতরাং বাচ্চার বয়স যদি ১ সালের কম হয় সেক্ষেত্রে কেবলমাত্র কাশি নয় যেকোন রোগ হলে শুরুতে না খাইয়ে ট্রাই করবেন বুকের দুধ সুন্দর ভাবে দেয়ার।

এরপর ও যদি সুস্থ না হয় সেক্ষেত্রে আমরা সাজেশন করবো বেশ ভালো একজন বাচ্চা রোগ বিশেষজ্ঞ দেখান এবং চমৎকার চিকিতসা নিন। নিজে নিজে কতিপয় উল্টাপালটা খাওয়াতে যাবেন না। সেক্ষেত্রে হিতে বিপরিত হতে পারে।

বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

যেমনটা আমরা উপরে বলেছিলাম বাচ্চাদের কাশির সিরাপ প্রথমে দেয়া নির্ভুল না। গবেষনায় লক্ষ্য গেছে যেসব বাচ্চারা ছোট বেলায় বেশি পরিমানে কাশির সিরাপ সেবন করেছে পরবর্তীতে তাদের নানা রকম জটিলতা নোটিশ যায়। এইজন্য আমাদের সাজেশন থাকবে শুরুতে বাচ্চাদের কাশির সিরাপ না দিয়ে উপরে আমরা যে বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঘরোয়া টোটকা গুলো নিয়ে আলোচনা করেছিলাম তা অনুসরণ করতে পারেন। আশা করছি অনেক ভালো রেজাল্ট পাবেন। এরপর ও যদি একান্তই না সেক্ষেত্রে দূরদর্শী ডাক্তারের উপদেশ অনুযায়ী সিরাপ সেবন করতে হলে পারেন। পাদদেশে আমরা কতিপয় সিরাপের নাম দিচ্ছি আপনাদের সুবিধার জন্য।

  • তুশকা প্লাস
  • এডোভাস
  • রেমোকফ
  • বোক্সল
  • ওকফ
  • এমব্রক্স
  • নেকটার
  • মধুভাস

যারা আমাদের নিকট বাচ্চাদের কাশির এর নাম জানতে চান এই লিস্ট তাদের জন্য। তবে আমরা আবারো বলবো বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ট্রাই করবেন প্রথমে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলবে। ডাক্তারের উপদেশ ব্যতিত কোন রকম ঔষধ বা সিরাপ খাওয়াবেন না। ধন্যবাদ

পরিশেষে

উপরে আমরা চেষ্টা করেছি বাচ্চাদের কাশির সিরাপ, বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে। আশা করছি উপরের বিধান অনুসরণ করে বাচ্চার সোহাগ নিলে অনেক দ্রুত ই সুস্থ হয়ে উঠবে। আপনার কুটুম পক্ষান্তরে কাছের  মানুষের সাথে পোষ্টটি শেয়ার করার জন্য পারেন। আর চমৎকার লাগলে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য কন্টেন্ট গুলো দেখতে পারেন। ধন্যবাদ.

বাংলা ব্লগস্পট
বাংলা ব্লগস্পট

বাংলা ব্লগস্পট একটি মাল্টি নিশের বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম। এখানে বাংলা ভাষায় জ্ঞান বিতরণের চেষ্টা করা হয়।

Newsletter Updates

Enter your email address below to subscribe to our newsletter

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *