মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর উপায় বিস্তারিত জেনে নিন
আজকের আলোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর উপায়। আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমাদের শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে হরমোন । আর এই হরমোন বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। তার মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হরমোনের নাম হচ্ছে এই টেস্টোস্টেরন হরমোন।
যাইহোক বন্ধুরা অনেক সময় মেয়েদের শরীরে টেস্টারন হরমোন বেড়ে যায় যার কারণে আজকের পোস্টে আমরা মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানো উপায় সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত বুঝিয়ে বলব । চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক ।
মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর উপায় – মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়
আমরা আজকের এই পোস্টে মূলত কয়েকটি পয়েন্টে আপনাদেরকে এই মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর উপায় বিষয়টি বুঝিয়ে দেব । প্রথমে আমি আপনাদেরকে এটা বলব যে মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয় এবং তারপর মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর উপায় সম্পর্কে দুইটা পয়েন্ট তুলে ধরব । একটি হচ্ছে মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর ঔষধ এবং আরেকটি হচ্ছে মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর খাবার । তাহলে চলুন আমরা এক এক করে পয়েন্ট গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করে দেই ।
মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়
বন্ধুরা টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর উপায় গুলো জানার আগে আপনাদেরকে অবশ্যই এই মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয় সেই সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে । যদিও এই টেস্টোস্টেরন হরমোনটি মূলত ছেলেদের শরীরে বেশি থাকে, কিন্তু মেয়েদের শরীরেও অল্প পরিমাণ কিছু এই হরমোনটি থেকে যায় । কিন্তু এই হরমোন যদি মেয়েদের শরীরে অনেক বেশি মাত্রায় বেড়ে যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায় ।
পড়ুনঃ সাত দিনে মোটা হওয়ার উপায় | মোটা হওয়ার ঔষধের নাম জানতে চান?
হরমোনটি মেয়েদের শরীরের বৃদ্ধি পেলে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেগুলো নিচে আপনাদেরকে একটু ধারণা দিয়ে দিলাম ।
গোফ ও দাড়ি উঠা: আমরা সকলেই জানি ছেলেদের গোঁফ এবং দাড়ি ওঠে এবং এর মূল কারণ হচ্ছে টেস্টোস্টেরন হরমোন। অর্থাৎ টেস্টোস্টেরন হরমোন বেশি আছে বলেই ছেলেদের মুখে গোঁফ এবং দাঁড়িয়ে উঠে থাকে । কিন্তু যদি কোন মহিলার শরীরেও এই টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পায় তাহলে তার মুখেও কিছু পরিমাণ গোফ ও দাড়ি উঠার সম্ভাবনা রয়েছে । যেটা ওই মহিলাকে অস্বস্তি বোধ এ ফেলে এবং আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন করতে পারে ।
দৈহিক স্থূলতা বেড়ে যাওয়া: সবাই নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে টেস্টোস্টের হরমোন একটি শক্তিশালী হরমোন । এই হরমোনের কারণে দেহের স্থুলতা ও বৃদ্ধি পেতে পারে । অনেক সময় মেয়েদের দেহে যদি এই হরমোন বৃদ্ধি পায় তাহলে তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় যার কারণে অবশ্যই এই হরমোনটিকে কন্ট্রোলে রাখতে হবে ।
ঘুমের সময় বিভিন্ন সমস্যা: আমরা জানি ঘুম আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস । কিন্তু কোন মহিলার দেহে যদি টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পায় তাহলে তার ঘুমের সময়ও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে । এই সমস্যা গুলো কিছু কিছু সময় মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে ।
যেমন মহিলাদের ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার সমস্যাটি হতে পারে, ঘুমের মধ্যে হঠাৎ নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া অর্থাৎ নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হতে পারে । এছাড়াও ঘুম কম হওয়া কিংবা ঘুম বেশি হওয়ার মত সমস্যাও হয়ে যেতে পারে ।
মানসিক ভারসাম্যহীনতা: বেঁচে থাকার জন্য মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা ছোট বড় আমরা সবাই জানি । কিন্তু মহিলাদের দেহে যখন অস্বাভাবিকভাবে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পায় তখন তাদের মানসিক ভারসাম্যহীনতার সমস্যা দেখা দিতে পারে । অর্থাৎ হঠাৎ করে কিছু ভুলে যাওয়া, মুখস্ত বিদ্যা কমে যাওয়ার মত এই ধরনের সমস্যা হতে পারে ।
হার্টের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া: মানুষের দেহে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হার্ট । হার্ট যদি কারো আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি কম । তো যদি কোন মহিলার দেহে এই ধরনের হরমোন গুলোর মাত্রা বেশি হয়ে যায় তাহলে তাদের এই সমস্যাটি হার্টের ওপরও ঝুঁকি হতে পারে । অর্থাৎ হার্টের বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে যেমন হার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া এছাড়াও হার্টের নালীতে চর্বি জমে যাওয়ার মত সমস্যা হতে পারে ।
উপরে বর্ণিত সমস্যা গুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে যার কারণে আপনাদেরকে অবশ্যই এই মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর উপায় সম্পর্কে ধারণা রাখতেই হবে । চলো তাহলে নিচে আমরা মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর ঔষধ এবং মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর খাবার গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই ।
মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর খাবার
বন্ধুরা এখন আমরা মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর খাবার গুলোর মধ্যে যে খাবারগুলো আপনাদের সাথে আলোচনা করব এগুলো সেবন করলে অবশ্যই আপনাদের শরীরে হরমোনের মাত্রা অনেক অংশ কমে যাবে এবং আপনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সক্ষম হবেন ।
দুগ্ধজাত দ্রব্য খাওয়া: আমরা সকলেই জানি দুধ আমাদের শরীরের জন্য কত উপকারী একটি খাবার । তো এই দুধ আমাদের শরীরে অনেক ধরনের উপকার করার পাশাপাশি শরীরে হরমোনের সমস্যা ও ঠিক করতে সহায়তা করে । তাই যদি আপনার শরীরে কোন ধরনের হরমোনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার নিয়মিত দুধ পান করা উচিত এবং এর পাশাপাশি দুগ্ধজাত খাবার গুলো খাওয়া উচিত । যেমন- ঘি ,মাখন ,দই ,পনির ইত্যাদি । এই খাবারগুলো আশা করি আপনাদের হরমোনের সমস্যাকে ঠিক করতে সাহায্য করবে।
পড়ুনঃ কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা কি? বিস্তারিত জানুন
পুদিনা পাতা খাওয়া : যদি আপনার শরীরে সত্যি টেস্টোস্টেরন হরমোনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি চাইলে এই পুদিনা পাতা খেতে পারেন । কারণ এই পুদিনা পাতা আপনার শরীরে উৎপন্ন হরমোন এর মাত্রা কমিয়ে দেবে এবং নতুন করে টেস্টোস্টেরন হরমোন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাবে । তবে হ্যাঁ অবশ্যই দীর্ঘদিন এটি খাওয়া যাবে না এতে করে আপনার শরীরে সাইড ইফেক্ট দেখা দিতে পারে ।
কফি পান করা: জানলে অবাক হবেন এই কফি মানুষের শরীরের টেস্টোস্টেরল হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে । তাই অনেককেই বলতে শুনবেন যে পুরুষদের কফি খাওয়া উচিত নয় কারণ এই কফি খেলে তাদের শরীরের অরজিনাল হরমোনটি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে । তবে আপনার শরীরে যদি টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় তাহলে আপনাকে অবশ্যই কফি পান করা উচিত তাহলে আশা করি সমস্যাটি সমাধান হবে ।
নিয়মিত কৃত্রিম চিনি খাওয়া: চিনি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ঘটায় এর মধ্যে একটি হচ্ছে একটি টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দেয় । তো এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনি চাইলে চিনি খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের অস্বাভাবিক টেস্টোস্টেরন মাত্রাকে কমিয়ে দিতে পারবেন ।
তবে হ্যাঁ যে সকল ব্যক্তি নিজের শরীরের মাথা বাড়াতে যাচ্ছেন তারা কোনভাবেই এই জিনিস এমন করবেন না এতে করে আপনার শরীরে মারাত্মক সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা কমিয়ে দিবে ।
ভাজাপোড়া তৈলাক্ত খাবার সেবন করা: আপনারা অনেককেই বলতে শুনবেন যারা এই ধরনের ফাস্টফুড গুলো খেতে নিষেধ করে । এর প্রধান কারণ হচ্ছে এই ফাস্ট ফুড গুলো আমাদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা অনেক কমিয়ে দেয় । কিন্তু আপনি যেহেতু এই টেস্টোস্টেরন হরমোন আপনার শরীর থেকে কমাতে চাচ্ছেন তাহলে অবশ্যই আপনার এই ধরনের খাবার গুলো বেশি করে খাওয়া উচিত ।
তবে হ্যাঁ মনে রাখবেন এই খাবারগুলো আপনার হরমোনের সমস্যা ঠিক করলেও অন্য ধরনের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমন আপনি মোটা হয়ে যেতে পারেন এছাড়াও আরো বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই এই খাবার গুলো বেশি খাওয়া যাবে না আপনি চাইলে অল্প অল্প করে খেতে পারেন ।
মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর ঔষধ
ওপরে আপনারা এতক্ষণ মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর খাবার সম্পর্কে পড়ে আসলেন এখন এই পয়েন্টে আমি কিছু ঔষধ সম্পর্কে কথা বলব।
বন্ধুরা মনে রাখবেন সব সমস্যার সমাধানে শুধুমাত্র ঔষধ সেবন করা উচিত নয় । কারণ ঔষধ আমাদের শরীরের রোগ ঠিক করতে পারলেও প্রত্যেকটা ঔষধেরই কিছু না কিছু সাইড ইফেক্ট আছে । আর এই সাইড ইফেক্ট গুলো ভবিষ্যতে আমাদের জীবন যাপনকে অনেকটা কঠিন করে দিতে পারে। তাই আমি আপনাদেরকে বলব যদি আপনি আপনার শরীরের হরমোন সম্পর্কিত কোনো সমস্যা ঠিক করতে চান তাহলে অবশ্যই সেটা ন্যাচারালি ঠিক করার চেষ্টা করবেন । আপনার শরীর নিজেই সব ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম । আপনি যদি সেখানে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ প্রয়োগ করেন তাহলে সেটা হিতে বিপরীত হতে পারে ।
আর একটা কথা যেকোন ঔষধ সেবন করার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন এবং আপনার শরীরের অবস্থা যাচাই করেই কোন ওষুধ সেবন করবেন । যদিও আমি বেশ কিছু মেয়েদের টেস্টোস্টোন হরমোন কমানোর ঔষধ সম্পর্কে জানি কিন্তু এখানে আমি কোন ঔষধ এর নাম লিখবো না । প্রধান কারণ হচ্ছে আমি কোন অভিজ্ঞ ডাক্তার নই। আমাদের প্রত্যেকটি পোস্ট ইন্টারনেট থেকে ইনফরমেশন সংগ্রহ করে গুছিয়ে লেখা হয় ।
পরিশেষে: আশাকরি আপনারা সবাই আমাদের আজকের এই পোস্টটি পরে মেয়েদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমি এখানে বেশকিছু খাবারের কথা বলেছি , এগুলো খেলে ইনশাআল্লাহ আপনার সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে । আর হ্যা একটি গুরুত্বপূর্ন কথা হচ্ছে আপনি যদি সত্যিই আপনার শরীরের অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরন হরমোন এর মাত্রা কমাতে চান। তাহলে আপনাকে এমন কোনো খাবার বেশি খাওয়া যাবে না ,যেগুলো আপনার শরীরের অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করতে পারে। যদি পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে চাইলে আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
You have to wait 60 seconds. Generating next Post Link…( 2 No. Post)
|